অনিয়ম, অবহেলায় চলছে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা। প্রয়োজনীয় ওষুধ রোগীদের সরবরাহ না করায় মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজন মত জনবল থাকার পরও ডাক্তারদের অনিয়ম ও অবহেলার কারনে সঠিক চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেনা সাধারন রোগীরা। দৈনিক ওষুধ সরবরাহের তালিকায় রোগীদের ওষুধ দেওয়ার বিধান থাকলেও কোন ওষুধই দেওয়া হয় না।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগ, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে হাসপাতালের ডাক্তারদের সখ্যতা থাকায় কমিশনের বিনিময়ে তাদের ওষুধ পেসক্রিপশনে লিপিবদ্ধ করে থাকেন। তাছাড়া এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তাররা বেশির ভাগ সময় স্থানীয় বিভিন্ন প্রাইভেট চেম্বারে নিয়মিত রোগী দেখা নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন। গত কয়েক দিন আগে সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগী সিটে থাকলেও অধিকাংশ ডাক্তার, নার্স ও স্টাফরা ছিলেন অনুপস্থিত। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আসতে থাকেন ডাক্তার, নার্স ও স্টাফরা। হাসপাতালে দীর্ঘ সময় অপেক্ষমান ৪/৫ মাসের শিশুদের কোলে নিয়ে চিকিৎসা সেবা পাওয়ার আসায় বসে আছেন মায়েরা। তবে হাসপাতালে অপেক্ষমান রোগীর চেয়ে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতি বেশী লক্ষ করা যায়।
স্থানীয়রা জানান, কুতুবদিয়া হাসপাতালে রোগী নেওয়ার সাথে সাথে টাকার বিনিময়ে রেফার করে দেন। ফলে হাসপাতালে কোন রোগী নাই বললেই চলে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ঠিকমত কার্যালয়ে থাকেন না। অফিস চলাকালীন বেশির ভাগ সময় মিটিং করার অযুহাতে বাহিরে থাকেন। বেশির ভাগ সময় তিনি ফার্মেসিতে রোগী দেখেন। ওয়ার্ডবয়দের দিয়ে রোগীদের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন অফিসিয়াল কার্যক্রম চলছে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। আর এসবই নাকি হচ্ছে ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর ছত্রছায়ায়। এসময় ভূক্তভোগি রোগী ও সাধারন মানুষের সঙ্গে আলাপকালে বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতি ও ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরেন তারা।
উপজেলার উত্তর ধূরুং ইউনিয়নের জহির আলী সিকদার পাড়ার রোকসানা বেগম বলেন, আমার সন্তান শিশুকে নিয়ে চারদিন যাবৎ বসে আছি। কোন ঔষধ পাচ্ছি না। পাশ্ববর্তী সিটের আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের সুন্ধিপ পাড়ার কমরুন আক্তার নামের একজন মা বলেন, আমার শিশুকে নিয়ে এসেছি প্রায় দু'দিন হয়েছে। কিন্তু ডায়রিয়া রোগী, চিকিৎসার জন্য ডাক্তার ও ঔষুধ কোনটিই পাচ্ছিনা। তাদের অভিযোগ ডাক্তাররা নিয়মিত না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে রোগীরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কাছ থেকে জানতে চাইলে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবহেলার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান এবং বলেন তুমি নতুন সাংবাদিক তাই বুঝ না কিছু। এসময় এশিয়ান টেলিভিশনের কুতুবদিয়া প্রতিনিধিকে মামলা ও গ্রেপ্তার করার হুমকী ধামকী দেন। তাকে দেখে নেবেন বলেও জানান তিনি।